হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি এবং কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা যুক্তকারী একটি রেলসেতু। ব্রিজটি পদ্মা নদীর উপর অবস্থিত এবং বাংলাদেশের দীর্ঘ রেলসেতু। সেতুটি 1909 সালে নির্মাণ কাজ শুরু করে 1915 সালে যাহা শেষ হয়। সেতুটির নকশাকার হলেন আলেকজান্ডার মেয়াডোস রেন্ডেল। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ এর নামানুসারে এই সেতুর নামকরন করা হয়। রেলসেতুর দৈর্ঘ্য 1798.32 মিটার বা 1.5 কিলোমিটার। এর উপর দুটি ব্রড-গেজ রেললাইন রয়েছে।

যেহেতু সেতুটি দুই উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে, তাই ভেড়ামারা থেকে প্রায় 8.5 কিমি উত্তরে এবং ঈশ্বরদী থেকে প্রায় 8 কিমি দক্ষিণে অবস্থিত। প্রায় 24 হাজার 400 শ্রমিক ও কর্মচালি প্রায় পাচ বছর কাজ করে নির্মান করেন এই ব্রিজটি।  1889 সালে অবিভক্ত ভারত সরকার আসাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও উত্তরবঙ্গের সাথে কোলকাতার যোগাযোগ সহজ করার জন্য পদ্মা নদীর উপর রেলসেতু নিমার্নের প্রস্তাব পাশ করেন।  ১৯০৮ সালে সেতুটি নির্মাণের মঞ্জুরী পাওয়ার পর প্রকৌশলী স্যার রবার্ট গেইলস সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯০৯ সালে সেতুটি নির্মাণের জন্য নিরীক্ষা-সমীক্ষা শুরু করা হয় এবং ১৯১০ থেকে 19১১ সালে পদ্মা নদীর  দুই তীরে সেতু রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ১৯১২ সালে সেতুটির গাইড ব্যাংক নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং পাশাপাশি সেতুর গার্ডার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১ শত ৬৪ টাকা। ব্রিজটিতে  রয়েছে ১৫টি স্প্যান। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেতুটিতে বোমা ফেলা হলে ১২ নম্বর স্প্যানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে এটি মেরমত করা হয়। পাকশীর বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে বোমাটি এখনও সংরক্ষণ করা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের দর্শনার্থীরা বোমার খোলসটি দেখতে এখানে আসেন।  সেতুটি দিয়ে শুধুমাত্র ট্রেন চলাচল করে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের শতবর্ষ পূর্ণ হয়।