কুড়িগ্রাম উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত একটি সীমান্তবর্তী জেলা। রাজধানী ঢাকা থেকে জেলা শহর কুড়িগ্রামের দুরত্ব প্রায় ৩৩৮ কিলোমিটার এবং বগুড়া হয়ে বাসযোগে যেতে সময় লাগবে ৯ ঘন্টার মত। ঢাকা থেকে বাস ও রেলপথে সরাসরি যাওয়া যায়। এছাড়াও বিমানে সৈয়দপুর হয়ে যাওয়া যায় কুড়িগ্রাম। ঐতিহাসিক এই জেলাটির রয়েছে সমৃদ্ধশালী ইতিহাস। তাই এর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে নানান দর্শনিয় স্থান।

কিভাবে যাবেন কুড়িগ্রাম

হক চেয়ারে কোচ
ফোনঃ ০১৭২২০৫২৮০৯

জবা চেয়ার কোচ
ফোনঃ ০১৭১২৭২৫৯৬৫

এসবি চেয়ার কোচ
ফোনঃ ০১১৯৭০২৫৬১৫

মোল্লা চেয়ার কোচ
ফোনঃ ০১৭২০১৭২৮৭১

হানিফ চেয়ার কোচ
ফোনঃ ০১৭৬৭২৯২৩৩

নাবিন চেয়ার কোচ
ফোনঃ ০১৭১৪৮২৭৩৭৩

ভাড়া

এসি বাসে ৭০০ টাকা
নন-এসি বাসে ৩৫০/- থেকে ৫০০/-

রেলপথ

ঢাকার কমলাপুর থেকে সরাসরি ট্রেন রয়েছে কুড়িগ্রামে।
রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ০৯.০০ ছেড়ে যায় রাত ৭.০০ টায় পৌছায়
লালমনি এক্সপ্রেস রাত ১০.১০ মিনিটে ছেড়ে য়ায়

বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে অথবা এ্যাপ দিয়ে টিকেট কেটে নেওয়া যায়।

চিলমারী বন্দর: কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ব্রমপুত্র নদের তীরে অবস্থিত চিলমারী বন্দর। কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনাল থেকে অটো বাইক নিয়ে সরাসরি যাওয়া যায়। চিলমারি বন্দর সংলগ্ন ব্রম্মপুত্র নদ দিয়ে ব্রিটিশ আমলের মতো বড় বড় জাহাজ চলাচল না করলেও নৌপরিবহন ব্যবসাটি আজও টিকে রয়েছে।

সুইচগেট: কুড়িগ্রামের মোগলবাসার ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। অটোরিক্সা করে খুব সহজেই যাওয়া যায় এখানে। বিভিন্ন উৎসবে এখানে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি থাকে। কিন্তু ভ্রমনের জন্য বছরের যে কোন সময়ই যাওয়া যায়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি অনেক বেশি বেড়ে যায় এবং বন্যার আশংকা দেখা দিলে গেইটটি বন্ধ করে দিয়ে নদীরে পানির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। উত্তর দক্ষিণে লম্বা গেইটটিতে সর্বমোট ১৬ টি গেইট রয়েছে।

চান্দামারী মসজিদ: মসজিদটির অবস্থান কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার মন্ডলপাড়ায়। সড়কপথে রাজারহাট উপজেলা থেকে ৪ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মসজিদটি অবস্থিত। কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে নেমে অটোরিক্সায় করে যেতে হবে রাজাবাজার হাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় এবং এই কার্যালয়ের খুব কাছেই রয়েছে মসজিদটি। মসজিদটিতে সুলতানী আমলের শিল্প বৈশিষ্ট্য ও মোগল স্থাপত্যকলার সমন্বয় ঘটেছে। মোঘল আমলের এই মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্ভুজ ও তিনটি মেহরাব। ধারণা করা হয় মসজিদটি ১৫৮৪ থেকে ১৬৮০ খিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময় নির্মাণ করা হয়।

শাহী মসজিদ: কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা সদর থেকে ১ কিমি উত্তর-পূর্ব দিকে ব্যাপারীপাড়ায় এই শাহী মসজিদ। রাজারহাট থেকে থেকে যাতায়াতের জন্য রিক্সা ও অটোরিক্সা রয়েছে। মসজিদের সামনেই রয়েছে মনোরম সুন্দর দিঘি। চারপাশে ৩ ফুট উঁচু প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত মসজিদের সামনে রয়েছে ৩টি দরজা ছাড়াও একটি সুদৃশ্য প্রবেশ তোরণ, ২টি মিনার এবং চার কোণায় ৪টি উচুঁ মিনার রয়েছে। মিনারগুলোর পাশে আছে আরো ৮টি ছোট ছোট মিনার । ৩টি বড় আকৃতির গম্বুজ রয়েছে ছাদের মাঝখানে। মসজিদটিতে কোন শিলালিপি না থাকলেও অনুমান করা হয় মোগল স্থাপত্যশৈলিতে নির্মিত মসজিদটি  প্রায় ২০০ বছরের পুরাতন ।

চন্ডি মন্দির: চন্ডিমন্দিরটি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সদর থেকে ৩ কিমি পূর্বদিকে ধামশ্রেণী নামক স্থানে অবস্থিত। কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনাল থেকে অটোরিক্সায় করে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় যাবেন এবং তার পাশেই মন্দিরটি রয়েছে।মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নির্মিত মন্দিরটি দেখতে অনেকটা কালীমন্দিরের ন্যায়। ভূমিকম্পে এটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখানে নতুন একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে।

ভিতরবন্দ জমিদার বাড়ি: জমিদার বাড়িটি কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে ১৬ কিমি দূরে নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের অবস্থিত। কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনাল থেকে অটোরিক্সায় করে নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সামনে যেতে হবে। তার কাছেই রয়েছে ভিতরবন্দ জমিদার বাড়ি। ইংরেজ শাসনামলে রাজশাহী ছিল ভেতরবন্দ পরগণার সদর দপ্তর। জমিদারবাড়িটি কাঠের তৈরি। যদিও বর্তমানে বাড়ির অর্ধেকটা ব্যবহার করা হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় হিসাবে, আর বাকি অর্ধেকটা এখন আর নেই।

সোনাহাট স্থলবন্দর: কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলা হতে সোনাহাট স্থল বন্দরের দুরত্ব ১২কিলোমিটার। এই দুরত্বের মাঝখানে ১৮৮৭ সালে তৈরি ৪৫০মিটার লম্বা একটি লোহার তৈরি রেলওয়ে ব্রিজ অবস্থিত। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নের সোনাহাট সীমান্তে এ স্থল বন্দর অবস্থিত। ঢাকা টু ভুরুঙ্গামারীর ডে ও নাইট কোচে ভুরুঙ্গামারীতে নেমে মাত্র ২০ টাকা অটোরিক্সা ভাড়ায় সোনাহাট স্থল বন্দর যেতে পারেন। নদীর তীরবর্তী হওয়ার কারণে ব্রিটিশ আমলে সোনাহাট স্থল বন্দরটি বিখ্যাত বাণিজ্যিক কেন্দ্র  ছিল।

সোনাহাট স্থল বন্ধরটি ভারতের আসাম এবং পশ্চিম বঙ্গের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত যা ভারতের সেভেন সিষ্টার বলে খ্যাত অঙ্গ রাজ্যের গেটওয়ে হিসেবে কাজ করছে। এ বন্দর দিয়ে ভারত, আসাম ও নেপাল হতে কয়লা, কাঠ, টিম্বার, পাথর, সিমেন্ট, চায়না ক্লে, বল ক্লে, কোয়ার্টজ, রাসায়নিক সার, কসমেটিক সামগ্রী, পশু খাদ্য, বিভিন্ন ধরণের ফলমূল, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, চাল, ডাল, গম, বিভিন্ন ধরণের বীজ, তামাক ডাটা প্রভৃতি মালামাল আমদানী করা হয়।

বর্ডারহাট: কুড়িগ্রাম থেকে বাস অথবা অটো সিএনজি যোগে  রাজীবপুর হয়ে যেতে পারেন বালিয়ামারী সীমান্ত হাট। বাংলাদেশের বর্ডারহাট গুলোর মধ্যে রাজিপুর সীমান্তে একটি রয়েছে। পাহাড় এবং নদীর ঠিক মধ্যখানেই এই হাট। সপ্তাহে ২দিন এখানে বাজার বসে। খুব সহজে পাশ সংগ্রহ করে আপনিও যেতে পারেন বর্ডার হাটে।

উলিপুর মুন্সিবাড়ী: কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নে এর অবস্থান। উলিপুর বাজার থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত। আঠারো শতকের দিকে শ্রী ব্রজেন্দ্র লাল মুন্সি এই বাড়িটি নির্মাণ করেন।

আরও পড়ুন ঘড়িয়ালডাঙ্গা জমিদার বাড়ি