বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী বা সারদা পুলিশ একাডেমী ভারতীয় উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যাহা রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ২০ মাইল দুরে সারদায় অবস্থিত।

সারদা পুলিশ একাডেমী ১৯১২ সালে তৎকালীন বাংলা ও আসাম প্রদেশের পুলিশ অফিসার ও কর্মীদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৬০ সালে ভারত সরকার এইচএম কোর্টের মাধ্যমে একটি কমিশন নিয়োগ করে। ব্রিটিশ ভারতে পুলিশ প্রশাসনের পুরো প্রশ্নটি অনুসন্ধানের জন্য নিখুঁত ও অর্থনৈতিক পুলিশ গঠনের ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেয়। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ি ১৮৬১ সালে ৫ আইন কার্যকর করা হয়েছিল। এই আইনটি পুরো উপমহাদেশে পুলিশের কাজকে একীভূত করেছিল । আইনটি ভারতীয় পুলিশের সংগঠন, নিয়োগ এবং শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আজও বাংলাদেশে কার্যকর রয়েছে।

১৮৯৩ সালে পুলিশের পেশাগত শিক্ষা এবংআনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। ঢাকায় দুই মাসের জন্য সীমাবদ্ধ নির্দেশনার একটি পরীক্ষামূলক পাঠ্যক্রম চেষ্টা করা হয়েছিল। যাহার ফলাফল সন্তোষজনক হওয়ায় ভাগলপুরে একটি পুলিশ প্রশিক্ষণ স্কুল স্থাপনের জন্য সরকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে। ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন বঙ্গ বিভাগ ঘোষনা করেন। ভারতীয়রা “বিভাজন ও নিয়ম” নীতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল কিন্তু কার্জন বলেছিলেন যে এর ফলে প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জন করবে। ১৯৩১ সালে বঙ্গ প্রস্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতীয় প্রদেশের পশ্চিমবঙ্গ আবার একটি প্রদেশ হিসাবে একত্রিত হয়েছিল।

যার কারনে ভাগলপুর, বঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা এবং আসামের জন্য বিদ্যমান পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজ পুনর্গঠিত বিহার এবং উড়িষ্যা প্রদেশে গিয়েছিল যা তত্কালীন বাংলার কিছু অংশের সাথে পুনর্গঠিত হয়েছিল। এ জাতীয় পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলা ও আসাম প্রদেশের জন্য পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজের তাত্ক্ষণিক প্রয়োজনীয়তার জোর দাবি  জানানো হয়। ঢাকার ট্রেনিং ইনস্টিটিউশনে পর্যাপ্ত জায়গা ও থাকার ব্যবস্থা, উপযুক্ত জলবায়ু এবং রাজধানী শহর কলকাতা থেকে পরিদর্শন কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতির সীমাবদ্ধতা ছিল। যাহার ফলে মেদিনীপুর জমিদারী এস্টেট থেকে সরকার জমি কিনে সারদহস্থ বর্তমান স্থানে ১৯২১ সালের জুলাই মাসে পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয় । মেজর এইচ চামনিকে এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ করা হয়।

কিভাবে যাওয়া যায়

রাজশাহী শহর হতে বাস যোগে সরাসরি এখানে আসা যায় এবং ভাড়া জনপ্রতি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তাছাড়াও চারঘাট উপজেলা সদর হতে ভ্যানগাড়ি, ইজি বাইক ইত্যাদি যানবাহনে করে সরাসরি এখানে আসা যায়, দূরত্ব ১ কিঃমিঃ এবং ভাড়া প্রায় ১০ থেকে ১৫ টাকা।