এই লিখাটি আশাকরি আপনাকে ঢাকা থেকে গ্যাংটকে (Gangtok) যাবার সমস্ত বিষয় ধারণা পেতে কিছুটা সহায়ক হবে। গ্যাংটক হচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের রাজধানী এবং ভারতের বৃহত্তম শহর গুলির মধ্যে একটি। গ্যাংটক (Gangtok) পূর্ব হিমালয়ান রেঞ্জের শিবালিক পাহাড়ের ১৪৩৭ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এবং এখানে মাত্র ৩০,০০০ লোক বসবাস করেন। এই শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা লিখে ও মুখে দেওয়া অসম্ভব। গ্যাংটক হিমালয় পর্বতের উঁচু চূড়ায় একটি মনোরম এবং প্রাকিৃতিক পরিবেশে অবস্থিত। আপনি যদি সিকিমে প্রথমবার যান, তবে এর সৌন্দয্য আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না! গ্যাংটক ভ্রমণে যাওয়ার আগে ভ্রমণপ্রেমীদের অবশ্যই  এখানে ভ্রমণ তথ্যগুলো ভালো ভাবে জেনে যাওয়া প্রয়োজন, অন্যথায় আপনি সুন্দর প্রকৃতি সম্পর্কে অনেক কিছুই মিস করবেন। সিকিম শব্দটির অর্থ পাহাড়ের চারপাশে চলাফেরা করা।

 

সিকিম (গাংটক) ভ্রমণঃ

গ্যাংটক (Gangtok) এবং এর আশেপাশের অঞ্চল সুবিশাল পাহাড়-পর্বত দ্বারা ঘেড়া। বৈচিত্র্যময় নানান উদ্ভিদ সহ বিভিন্ন প্রাণীজ প্রাণি, এটি প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে স্বর্গের মত পরিণত হয়েছে। গ্যাংটকের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ রোদরঞ্জন, অর্কিডের মতো ফুলের পাশাপাশি লাল পান্ডা ও লাল রংয়ের পাখি। গ্যাংটকে পর্যটকদের মনকে আকর্ষণীয় করতে রয়েছে অনেক হ্রদ, ঝর্ণা এবং পাহাড় । তবে সসগো এবং মেনমেচো হ্রদগুলির মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত। গ্যাংটোক আপনাকে কাঞ্চনজঙ্ঘা, দার্জিলিংয়ের সৌন্দর্য থেকেও বঞ্চিত করবে না। গ্যাংটোক থেকে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। গ্যাংটকের প্রধান রাস্তা হলো এমজি মার্গ । এর আশেপাশেই অবস্থিত বিভিন্ন হোটেল এবং দোকান।

 

গাংটকের মূল আকর্ষণঃ

গ্যাংটকের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হ’ল এমজি এমআরজি বা মহাত্মা গান্ধী মার্গ। এই এমজি মার্গের রাস্তার মাঝখান দিয়ে সুন্দর ফুল দিয়ে সাজানো, যাহা দেখতে দুর্দান্ত লাগে। এখানে রয়েছে বসার জায়গা, সুসজ্জিত দোকান-পাঠ এবং রাস্তাগুলি সব সময় পরিস্কার-পরিছন্ন। এমজি মার্গের একপাশে মহাত্মা গান্ধীর একটি মূর্তি রয়েছে।

  • রুমটেক মনাষ্ট্রি
  • ছাঙ্গু লেক
  • টিবেটোলজি
  • চোর্তেন সৌধ
  • ফ্লাওয়ার শো
  • কটেজ ইন্ডাস্ট্রি
  • নামনাং ভিউ পয়েন্ট
  • তাশি ভিউ পয়েন্ট
  • হনুমান টক
  • গণেশ টক
  • জওলজিকাল গার্ডেন
  • ইঞ্চে মনাস্ট্রি
  • বনঝকরি ওয়াটারফলস
  • রোপওয়ে

গ্যাংটক যাওযার উপযুক্ত সময়

বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু করে মে মাস এবং সেপ্টেম্বর মাস থেকে নভেম্বর মাস পযর্ন্ত গ্যাংটক ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। শীতের সময় এখানে প্রচুর পরিমানে তুষারপাত হয়, যাতে এখানকার রাস্তাঘাট বরফ পরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও বর্ষার সময় প্রবল বৃষ্টিপাতের কারনে ভুমি ধসের কারনে অনেক স্পটেই যাওয়া যায় না।

কোথায় থাকবেন

আগে আপনার বাজেট হিসেব করুন এবং এমজি মার্গে ও এর আশেপাশে আপনার বাজেট অনুযায়ী হোটেল পেয়ে যাবেন। হোটেল বুকিং করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিবেন যে গরম পানির ব্যাবস্থা রয়েছে কিনা। যেহেতেু এখানে প্রচুর শীত পরে এবং গোসলের জন্য গরম পানির প্রয়োজন হবেই। নিম্মে কিছু হোটেলের নাম ও যোগাযোগের মাধ্যেম দেয়া হল।

হোটেলের নাম ফোন নম্বর ইমেইল
Mayfair Spa Resort & Casino +91-92328 55022 / 3592-250555 reservations@mayfairhotels.com
Yangthang Heritage
+91 3592 202588 info@yangthangheritage.com
Treebo Trend Hotel Orchid +91 93228 00100

ঢাকা থেকে গ্যাংটক কিভাবে যাবেন

বাসযোগে

ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সিমান্ত অথবা লালমনিরহাটের বুড়িমারী সীমান্ত দিয়ে যেতে হবে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি গ্যাংটক।

ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা যাওয়ার সরাসরি বাস হানিফ এন্টারপ্রাইজ এবং শ্যামলী পরিবহনের এসি বাস। শ্যামলী পরিবহন, শ্যামলী হল মোড় হইতে প্রতিদিন রাত 9.30 মিনিটে ছেড়ে যায়।  হানিফ এন্টারপ্রাইজ  প্রতিদিন সন্ধ্যা পৌনে ৬ টায় ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

এছাড়াও ঢাকা থেকে সরাসরি তেঁতুলিয়া যাওয়ার বাস রয়েছে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, নাবিল পরিবহন ছাড়াও অনেক বাস সার্ভিস রয়েছে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় যাওয়ার। তেঁতুলিয়া থেকে চলে যান বাংলাবান্ধা

অথবা ঢাকা থেকে সরাসরি পঁঞ্চগড় যায় হানিফ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, নাবিল পরিবহন, এনা এন্টারপ্রাইজ, খালেক, কেয়া, বিআরটিসি। পঞ্চগড় থেকে লোকাল বাস, মাইক্রো ভাড়া করে চলে যায় বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট।